প্রতিবেশীর বড়দিনে সম্প্রীতির ঐতিহ্য

ছোট বেলায় আমার বড়দিন মানে গোমেজের বাড়িতে দাওয়াত। তখন আমি নানা বাড়িতে থাকতাম, পাড়া-প্রতিবেশীর সমবয়সী কিছু বাচ্চাদের সাথে আমার একটা গ্যাং ছিল। একদিন সেই গ্যাংয়ের সাথে খেলতে এলো গোমেজ।

“তোমার নাম কি?”

- আমার নাম অনেক কঠিন, শুধু গোমেজ বলে ডাকো, এই এলাকাতে আর কোন গোমেজ নেই

ব্যাস, তারপর কখনো ওর নাম শোনার আগ্রহ হয়নি, আমরা সবাই ওকে গোমেজ বলেই ডাকতাম। প্রতিদিন বিকেলে আমাদের কাজ ছিল পাড়ার মাঠের পরিত্যাক্ত একটা ঢালাই মেশিনের চারপাশে গোল হয়ে নতুন নতুন খেলা আবিষ্কার করা। গোমেজ যেহেতু বাইরে থেকে এসেছিল, ওর কাছে থেকে নতুন অনেক খেলা শেখা হতো, এবং আমাদের মাঝে সে অল্পদিনে বিশাল জনপ্রিয়তা লাভ করে।

ডিসেম্বরের ২৫ তারিখে বাচ্চারা সবাই ওদের বাড়িতে যেতাম, ছোট বেলায় ভাবতাম এটা ওদের ঈদ। লাল আর সবুজ রঙ্গের সেই ডেকোরেশন যে বড়দিনকে নির্দেশ করে সেটা ছোটবেলায় বোঝার সাধ্য আমাদের ছিলো না। খাওয়া দাওয়া শেষে আমরা যেতাম খ্রিস্টান ফুলের বাগান দেখতে। সারাবছর সেখানকার দরজা আমাদের জন্য বন্ধ থাকলেও সেইদিন ছিলো খোলা। অনেক পরে বুঝতে পারি ওটা খ্রিস্টান কবরস্থান ছিলো।

ছোটবেলা হারিয়ে গেছে, হারিয়ে গেছে সেই সরলতার মতো অজ্ঞতা। কিন্তু গোমেজ আমার মন থেকে হারিয়ে যায় নি। প্রতি বড়দিনে লাল সবুজ ডেকোরেশন আর সান্টাক্লজের মিউজিক গোমেজের কথা মনে করিয়ে দেয়।

আমাদের বাংলাদেশের ঐতিহ্যটাই এরকম, এখানে কোন ধর্মের সাথে অন্য ধর্মের সংঘাত নেই, আছে সম্প্রীতি। আমার আপনার সকলের খ্রিস্টান প্রতিবেশীদের জানাই তাদের উৎসব “বড়দিনের” শুভেচ্ছা।


দূরত্ব নয়, এখন থেকে প্রতিবেশীদের স্নেহে বেড়ে উঠবে আপনার শিশু

দূরত্ব নয়, এখন থেকে প্রতিবেশীদের স্নেহে বেড়ে উঠবে আপনার শিশু
রিতা, দেখছ পাশের বাসার (building) সামরিন আন্টি আর লতা ভাবী তোমাকে সাহায্য করতে চেয়েছেন । তুমি উনাদের নাম্বারগুলো রাখ । উনাদের সাথে কথা বলে নিও ।