বিংশ শতাব্দীর "প্রোপার্টি ম্যানেজমেন্ট" সেবা সম্পর্কে আপনি আপডেটেড তো ?

আকবর সাহেবের মাথায় হাত । ভাবছেন তিনি কিভাবে তার বাসার ১৬ ফ্ল্যাটের সবাইকে বিদ্যুৎ থাকবেনা ব্যাপারটা জানাবেন । দারোয়ান আজকে ছুটি নিয়েছে, তার কাছে সব ফ্ল্যাট মেম্বারদের ফোন নাম্বারটাও নাই । কি আর করবেন, ৭০ উর্ধ্ব আকবর সাহেব নিজেই রওনা দিলেন ভাড়াটিয়াদের উদ্দেশ্য - এরকম ঘটনা কিন্তু এড়ানো যাবে সঠিক “প্রোপার্টি ম্যানেজমেন্ট”এর মাধ্যমে ।

চলুন দেখে আসি সাধারণ একটি “প্রোপার্টি ম্যানেজমেন্ট” এ কি কি সুবিধা পাওয়া যায় -

প্রোপার্টি ম্যানেজমেন্ট হলো আবাসিক, বাণিজ্যিক বা শিল্প ভবন রক্ষণাবেক্ষণের সমস্ত দায়িত্ব পালন করা । ভূমিকাটি সাধারণত একজন ম্যানেজার পালন করে থাকে । তখন বাড়ির মালিকের পরিবর্তে তার হাতেই কর্তৃত্ব বর্তায় ।  


প্রোপার্টি ম্যানেজমেন্টের মাঝে যা যা থাকতে পারে -  

১। ভাড়া নেওয়া -

ম্যানেজারের প্রধান দ্বায়িত্ব থাকে ঠিক মত সবার কাছ থেকে সঠিক সময়ে ভাড়াটা তোলা । মালিকের নিজের পক্ষে সবার কাছে যেয়ে ভাড়া নেওয়া যেমন সব সময় সম্ভব হয়ে ওঠে না, তেমনি এই কাজের মাধ্যমে মালিক-ভাড়াটিয়ার সম্পর্কে অবনতিও ঘটাতে পারে । তাই ম্যানেজার বা দারোয়ান সাধারণত এই দ্বায়িত্বটি পালন করে থাকে ।

২। পার্সেল -

সবসময় আমাদের পক্ষে পার্সেল নিজেরা রিসিভ করা খুব কষ্ট সাধ্য হয়ে দাঁড়ায় । এক্ষেত্রে ম্যানেজার বা দারোয়ান যদি পার্সেলটা কোথায় আছে দেখতে এবং নিজেরা আমাদের পক্ষ থেকে রিসিভ করে তাহলে অনেক ঝামেলা কমে যায় ।

বিভিন্ন উন্নত মানের প্রপার্টি ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি আজকাল এই সুবিধাটি চালু করছে, দেখতে পারেন ।

৩। রক্ষণাবেক্ষণ -

একটি বাসায় হাজার রকমের কাজ থাকে। যেমন পানির জন্যে পাম্প চালু করা , পানি উঠে গেলে বন্ধ করা । নিয়মিত জেনারেটর চেক করা । লিফটের কাজ । আবার সিঁড়ি ল্যান্ডিংয়ের লাইট জ্বালানো ।

এতশত কাজ বাড়িওয়ালার নিজের পক্ষে পালন করা প্রায় অসম্ভব । এগুলো কেয়ারটেকার বা ম্যানেজার করে থাকে ।  

৪। নোটিশ -

ভাড়াটিয়ার সব চেয়ে বেশি প্রয়োজনের কেন্দ্র নোটিশ । দারোয়ান কিংবা কেয়ারটেকারের দায়িত্ব সবার কাছে সঠিক সময়ে নোটিশ গুলো পাঠানো । এবং নিশ্চিত করা যাতে কেউ দুর্ভোগে না পরে ।

৫। পরিদর্শন -

বাসায় কোন ভাড়াটিয়া কোন আইন বিরোধী কাজ করছে কিনা, সেটি দেখার জন্যে মাঝে মাঝে তাদের পরিদর্শন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । একাজটিও প্রপার্টি ম্যানেজমেন্টের মাঝে পরে ।

৬। বিল দেওয়া -

বিদ্যুৎ, গ্যাস, ইন্টারনেটের বিল সাধারণত বাড়িওয়ালা নিজে যেয়ে দিয়ে আসেন না । প্রপার্টি ম্যানেজমেন্টের জন্য নিযুক্ত কর্মীদের মধ্যে থেকে কেউ, যেমন কেয়ারটেকার এই দায়িত্ব পালন করে থাকে ।

৭। বাসা পরিষ্কার রাখা -

প্রতিদিন সবার ফ্ল্যাট থেকে ময়লা নেওয়া, পুরো বাসার সিঁড়ি, উঠান, গেটের চারপাশ এগুলো পরিষ্কার করতে লোক রাখতে হয় । তারা ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা সেটা দেখা এবং তাদের বেতন দেওয়া একজন ম্যানেজারের কাজ ।

৮। প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ -

বিভিন্ন বাসায় বিভিন্নভাবে দারোয়ান বাইরের মানুষের প্রবেশ নিয়ন্ত্রন করে থাকে। বেশিরভাগ বাসাতেই একটি খাতার মাধ্যমে কিংবা মৌখিক জিজ্ঞাসাবাদের পরেই কেউ ঢুকতে পারে ।

প্রপার্টি ম্যানেজমেন্টে ২০২১ সালে বাংলাদেশে খুব পরিচিত একটি সেবা । আপনার বাসার আকার এবং জনসংখ্যা অনুসারে এই সেবাগুলোর প্রয়োজনের কিছু তারতম্য হতে পারে । তবে, বাড়ি একটু বড় হলে এর মধ্য থেকে কিছু সেবা গ্রহণ করাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ ।  


Similar Article -

যে প্রান্তে রিয়েল এস্টেটের কাজ শেষ, ঠিক সেখানেই স্কয়ারফিটের ভূমিকা শুরু
যখন আপনার বিল্ডিং পরিচালনা আপডেট হবে, তখন ভাড়াটিয়াদের যেমন সুবিধা হবে, তেমনি বাড়ির মালিক হিসেবে অনেক জটিল দায়িত্বগুলো আপনি নিমিষেই পালন করে ফেলতে পারবেন ।