রাজশাহীর আম, কালাই রুটি
রুপার মন খুব খারাপ, তার বাবার ট্রান্সফার হয়েছে। যদিও বাবা-মা অনেক খুশি, কারণ তারা ঢাকা ছেড়ে তাদের গ্রামের বাড়ি রাজশাহীতে যেতে পারছে। কিন্তু এই কমিউনিটিতে রুপার যে বন্ধুরা আছে তাদের ছেড়ে যেতে রুপার মোটেই ইচ্ছা করছে না।
রুপা মাকে কয়েকবার বলেছে যেন থেকে যায়। মা বলেছে, “দাঁড়াও, তোমার বন্ধুরা তোমাকে দেখতে যেন রাজশাহী আসে সে ব্যবস্থা করছি”। রুপা মায়ের কথা বিশ্বাস করেছে। তাদের কিছু জিনিস রেখে আসতে গত সপ্তাহে বাবা রাজশাহী গিয়েছিল, আজকে সকালে ঢাকা এসে পৌঁছেছে। সাথে নিয়ে এসেছে ক্যারেট ভর্তি আম। রুপা মাকে জিজ্ঞেস করল - “এত আম কি হবে মা?”
মা বললেন, “আজকে বিকেলে তোমার বন্ধুদের সবাইকে দাওয়াত করেছি।”
রুপা খুব খুশি, সবাই মিলে একসাথে অনেক মজা হবে। এদিকে রুপার মা ব্যস্ত কালাইয়ের রুটি বানাতে। রুটির জন্য তার লাগছে ছোলাসহ মাষ কালাইয়ের ডালের গুঁড়া, চালের গুড়া, লবণ আর পানি। সবগুলো উপাদান দিয়ে ডো বানিয়ে সেটা হাত দিয়ে চেপে চেপে রুটি বানিয়ে মাটির তাওয়াতে ভেজে নিলেই রুটি তৈরী। তার সাথে হচ্ছে ধনে পাতার চাটনি, সরিষা ভর্তা, বেগুণ ভর্তা, এবং আমের চাটনি।
স্কয়ারফিটের পোষ্টের জন্য বিকেলে শুধু রুপার বন্ধুরা নয়, এলো তাদের বিল্ডিংয়ের সবাই। প্রথমে কালাইয়ের রুটি, তারপর সবাই খেল হিমসাগর এবং আম্রপালি। সবাই খুব খুশি।
তখন মা সবাইকে বলল- “সামনের সপ্তাহে আমরা রাজশাহী চলে যাচ্ছি, আপনার অবশ্যই রাজশাহীতে বেড়াতে যাবেন। সবার জন্য আমাদের বাড়ির আম বাগানের দরজা সবসময় খোলা।”
ছোট্ট রুপা ঢাকা থেকে চলে যাওয়ার সময় তেমন কান্না করল না। তার ধারনা মায়ের দাওয়াতে তার বন্ধুরা অবশ্যই রাজশাহীতে বেড়াতে আসবে।