সেই যে তারা ঘর থেকে বাইরে গেলেন, ফিরে আর আসেন নি
তারা সেদিন তাদের বাড়িতে, নিজের ঘরেই ছিলেন। হয়ত কখনো ভাবতে পারেন নি সেই নিরাপদ আশ্রয় থেকেই তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হবে হত্যা করতে। আর কখনো ফিরতে পারবেন না নিজেদের আবাসস্থলে। ডাঃ ফজলে রাব্বির বাড়ির পাঁচিল পারেনি তাকে রক্ষা করতে…
১৪ই ডিসেম্বর ১৯৭১, অন্যসব দিনের মতো সেদিনও নিজ গৃহে বিশ্রাম করছিলেন ডাঃ ফজলে রাব্বি। তার পাঁচিল ঘেরা বাড়ির সামনে এসে থামল একটি গাড়ি। সেখান থেকে ৬-৭ জন আলবদর নেমে দরজা ধাক্কা দিচ্ছে। কিন্তু কোন সাড়া না পেয়ে পাঁচিল টপকে তারা ঢুকে পড়ল ভেতরে। তারপর…
এভাবে সেদিন আমরা হারিয়েছি সাংবাদিক শহীদুল্লা কায়সার, অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, সন্তোষ ভট্টাচার্য, গিয়াসউদ্দীন আহমেদ, সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন, আ ন ম গোলাম মোস্তফা, বিবিসির সাংবাদিক নিজামুদ্দীন আহমদ, পিপিআইয়ের ব্যুরোপ্রধান সৈয়দ নিজামুল হক,ডা. আবদুল আলীম চৌধুরী, শিলালিপির সম্পাদক সেলিনা পারভিনসহ আরও অনেক মূল্যবান মানুষকে।
একটি আনুমানিক পরিসংখ্যান বলে বিজয়ের ঠিক দুই দিন আগে ৯৯১ জন শিক্ষাবিদ, ১৩ জন সাংবাদিক, ৪৯ জন চিকিৎসক, ৫২ জন আইনজীবী এবং নাম না জানা অনেকগুলো বুদ্ধিজীবী শহীদ হন। আজকের বাংলাদেশ যেখানে দাঁড়িয়ে তারা থাকলে হয়তো আরো অন্যন্য উচ্চতায় পৌঁছাতে পারত। তাদের প্রাণের এই ঋণ কখনোই মেটাবার নয়।
তারা সেদিন তাদের বাড়িতে, নিজের ঘরেই ছিলেন। হয়ত কখনো ভাবতে পারেন নি সেই নিরাপদ আশ্রয় থেকেই তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হবে হত্যা করতে। আর কখনো ফিরতে পারবেন না নিজেদের আবাসস্থলে। ডাঃ ফজলে রাব্বির বাড়ির পাঁচিল পারেনি তাকে রক্ষা করতে…
তেমনি রাজাকারদের পাশবিক মনুষ্যত্বের হাত থেকে এতগুলো প্রাণ পারে নি বাঁচতে। তাই তাদের এই ত্যাগ স্মরণে রাখতে, আমরা বাংলাদেশীরা ১৪ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করে থাকি।
References -
৩। Bangladesh Old Photo Archive